Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

কোকো ফলের গুণাগুণ ও বাংলাদেশে আবাদ সম্ভাবনা

কোকো ফলের গুণাগুণ ও বাংলাদেশে আবাদ সম্ভাবনা
সমীরণ বিশ্বাস

কোকো দক্ষিণ আমেরিকার আমাজান উপত্যকার উদ্ভিদ। মধ্য আমেরিকায়ও চাষ হয় এ ফল। তারপর আফ্রিকার ঘানা, আইভরিকোস্ট, নাইজেরিয়া, ক্যামেরুন এ ফল চাষ শুরু করে। এশিয়ার মালায়শিয়া, ইন্দোনেশিয়া, নিউগিনি ও বর্তমানে দক্ষিণ ভারতে ও উড়িষ্যায় কোকো ফলের চাষ হচ্ছে।
কোকো গাছে ফুল ও ফল ধরতে সময় লাগে ৩-৪ বছর। ফুল ফলে পরিণত হয় ৬ মাসে। প্রতিটি কোকো ফলের ৫টি সারিতে ৩০-৪০টি বীজ থাকে। বীজ কলাপাতায় পেঁচিয়ে গাজানো হয়, তারপর বীজ সংগ্রহ করে রোদে শুকানো হয়। শুকানো কোকো বীজ সিদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে শাস পাওয়া যায়, যাকে বলে কোকো বিন। এই কোকো বিন থেকে অতি মূলবান কোকো গুড়া বা ডাস্ট (পাউডার) তৈরি হয়। কোকো বিনের গুঁড়াই কোকো পণ্য তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়। কোকো ডাস্ট (পাউডার) দিয়ে উৎকৃষ্ট মানের চকোলেট, মাখন, আইসক্রিম, রুটি, পুডিং, প্রসাধনী সামগ্রী ও পানীয় তৈরি করা হয়। উল্লেখ্য যে, ক্যাডবেরির চকোলেট তৈরি হয় কোকো ডাস্ট (পাউডার) দিয়ে।
কোকো পাউডার থেকে তৈরি পণ্য প্রোটিন, ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ। কোকো পাউডারের মিশ্রণে ভিটামিন, মাইক্রো, ম্যাক্রো উপাদান এবং অন্যান্য সক্রিয় পদার্থ বিদ্যমান যা শরীরের উপর বিশেষ প্রভাব ফেলে। প্রাকৃতিক কোকো পাউডারের প্রধান উপকরণ হলো ফ্লেভোনয়েড, ক্যাটাচিন এবং ইপেক্টিন। শরীরের মধ্যে এই পদার্থগুলো এন্টিঅক্সিডেন্টসমূহের কাজ করে। পাশাপাশি এই পদার্থ রক্ত সঞ্চালন এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি, চাপ স্বাভাবিক রাখে। ব্রোচিয়ার, হাঁপানি রোগীদের জন্য কোকো পাউডারে থিওফিলিন ও জ্যান্থাইন উপাদান খুব দরকারী। এই সক্রিয় পদার্থের এন্টিস্পাজমোডিক প্রভাব আছে যা ব্রোঙ্কাইটিস, হাঁপানি প্রতিরোধ এবং শ^াসপ্রশ^াস সহজ করে। কোকো পাউডারের অন্য উপাদান হলো ফেনিলেথিল্যামাইন যার কারণে ক্লান্তি ও বিষণ্নতা থেকে রোগীরা মুক্তি পায়। এর অনেক আগেই বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছে যে, কোকো পাউডারের উপাদান ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিকে দমন করে। ইহা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, পেশি এবং টিস্যুসমৃদ্ধ করে শরীরকে ক্ষতিকারক বেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করে। কোকো পাউডারের পানীয় মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
আমরা অনেকে জানি কোকো বিদেশি ফল। তবে একেবারেই নিরাশ হওয়ার কারণ নেই। সিসিডিবি হোপ সেন্টার ছাড়াও আমাদের দেশে আছে  কোকো গাছ। এখানেও কোকো ফল হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সংরক্ষিত বাগানে আছে একটি গাছ। ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস জার্মপ্লাজম সেন্টারে আছে আরও ১১টি গাছ। সিসিডিবি হোপ সেন্টারের গাছটি সুদূর ইন্দোনেশিয়া থেকে ফল ও বীজ সংগ্রহ করে গাছটি তৈরি করা হয়। এই গাছগুলোর বৃদ্ধি ও ফলন বেশ স¦াভাবিক। তবে ফলটি নিয়ে আমাদের দেশে পরীক্ষা নিরীক্ষা হয়নি।
কোকো গাছের চারা তৈরির জন্য পরিপক্ব ফল থেকে বীজ সংগ্রহের পরপরই সাধারণ মাটির বেডে চারা তৈরি করতে হবে। চারার বয়স একমাস হলেই নির্দিষ্ট জমিতে কোকো চারা রোপণ করা যাবে। বীজ সংগ্রহের পর নরমাল তাপমাত্রায় বেশি দিন বীজ রাখলে বীজ অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা হারিয়ে যায়।
কোকো চির সবুজ গাছ, দেখতে ঝোপাল,  ৭ থেকে ৮ মিটার পর্যন্ত উঁচুু হতে পারে। কাণ্ড ও ডালপালার গায়ে গুচ্ছবদ্ধ গোলাপি ও হলুদ রঙের ফুল ধরে। গাছের বয়স সাধারণত ৩ থেকে ৪ বছর সময়ে ফুল ধরতে শুরু করে। ফুল থেকে পরিণত ফল হতে সময় লাগে ৬ মাস। ফলের রং বাদামি, ৩০ সেন্টিমিটার লম্বা ও ১০ সেন্টিমিটার পুরু, বাইরের আবরণ  চামড়ার মতো শক্ত। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রায় ১০০ বছর আগে কোকো চাষ শুরু হলেও ফলটি অনেক পুরনো এবং হাজার হাজার বছর আগে থেকেই প্রকৃতিতে ছিল। মায়ানমারা মনে করত, কোকো ঈশ্বর প্রদত্ত ফল। পৃথিবী জুড়ে প্রায় ২৩ জাতের কোকো ফল দেখা গেলেও সাধারণত দুইটি জাতই প্রধান। সবচেয়ে বেশি কোকো ফল উৎপন্ন হয় আইভরিকোস্টে। বার্ষিক গড় উৎপাদন ১,৩৩০ টন। তারপর ঘানার অবস্থান, ৭৩৬ টন।
কোকো গাছ এমন একটি জায়গায় লাগানো দরকার যেখানে সরাসরি সূর্যের আলো পড়বে না। সাথী ফসল হিসেবে কোকো গাছ লাগানো যেতে পারে। পূর্ণাঙ্গ একটি কোকো গাছ থেকে প্রতি বছর ৩৫ কেজি বীজ পাওয়া যায়, যার প্রতি কেজি কোকো চকোলেট পাউডারের দাম ৪০ ডলার। প্রতিটি কোকো গাছ থেকে বছরে ১২০০ ডলার বা ৮৪ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। প্রতি বছর ভারত ও পাকিস্তান থেকে ২ লাখ টন কোকো ফল আমদানি করা হয় যাহার মূল্য প্রায় ৫শ’ কোটি টাকা।
বাংলাদেশে কোকো গাছ আবাদের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। কোকো গাছের চাষ করলে আমরা আন্তর্জাতিক বাজারেও অনায়াসেই একটা স্থান করে নিতে পারব। কারণ বাংলাদেশের মাটি ও জলবায়ু নিরক্ষীয় ও উপনিরক্ষীয় ফল চাষের জন্য উপযোগী। কোকো গাছের জন্য রেইনফরেস্ট সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের আধ্যাপক ডঃ সৈয়দ শফিউল্লাহ বেতছড়ি উপজেলায় তার নিজস্ব উদ্যোগে ১০০টি কোকো গাছ লাগিয়েছেন। এই ফল চাষ করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে সারা বিশ্বে রপ্তানি করা সম্ভব।
কৃষি বিজ্ঞানীদের মতে বাংলাদেশের জলবায়ু কোকো চাষের জন্য খুবই উপযুক্ত। ছাদ বাগানেও কোকো ফল চাষ করা যায়। কোকো গাছ ছাঁটাই করে গাছকে ছোট করে রাখা যায় এবং বড় বড় ছায়াবীথির নিচে এদের শ্রীবৃদ্ধি ভালো হয়। য়

কোঅর্ডিনেটর, অ্যাগ্রিকালচার, সিড অ্যান্ড বায়োচার প্রোগ্রাম, সিসিডিবি। ই-মেইল :srb-ccdbseed@yahoo.com, মোবাইল : ০১৭৪১১২২৭৫৫


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon